আজ ২৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো: আশরাফ আলীর সফলতার কাহিনী

 

নীলফামারী প্রতিনিধি :

নীলফামারীর ডিমলায় অবসর প্রাপ্ত সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো: আশরাফ আলী (এফএফ নম্বর-৬১/৩৩) বয়স তখন ১৯-২০ বছর। টগবগে যুবক, সুঠাম দেহের অধিকারী। বাবা-মায়ের আদরের সন্তান। অনেক সপ্ন, অনেক আশা। বড় হবে, চাকরি করবে। কিন্তু দেশ তো স্বাধীন না। উর্দু ভাষায় কথা বলা, অন্য দেশের কথা মতো চলা। না, মানি না এসব। সবাই দেশকে মুক্ত করার জন্য যুদ্ধে যাচ্ছে। আমিও যাবো যুদ্ধে, দেশকে স্বাধীন করবো। নীলফামারীর জেলার ডিমলা উপজেলার ছাতনাই বালাপাড়া গ্রামে মরহুম আব্দুল মজিদ দেওয়ান এর পুত্র বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো: আশরাফ আলীর জন্ম । ০৬ ভাই ০১ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন বড়। বাবা-মায়ের আদরের সন্তান। ৯ম শ্রেণিতে পড়ালেখা চলাকালীন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন দেশকে স্বাধীন করার জন্য। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ৬নং সেক্টর সেক্টর কমান্ডর খাদেমুল বাশার ও সাব সেক্টর ইকবাল রশিদের নেতৃত্বে সীমান্তবর্তী ডিমলা উপজেলার সম্মুখ রনাঙ্গনে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এখানে উল্লেখ্য যে, মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশে যুদ্ধ পরিচালনার সুবিধার্থে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল। এই সেক্টরের সরাসরি পরিধি উত্তরবঙ্গের নীলফামারী জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলার ডিমলা হিমকুমারী সীমান্ত সম্মুক রনাঙ্গনে যুদ্ধে অনেক বীভিষিকাময় স্মৃতি জড়িয়ে আছে তার। মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আশরাফ আলী বলেন, নীলফামারী জেলার বিভিন্ন এলাকায় আমরা যুদ্ধ করি। আমাদের সঙ্গে সবসময় একটি বন্দুক, একটি বেলচা (মাটি কাটার যন্ত্র), থালা, গ্লাস থাকতো। আমরা যখন রাতে ঘুমাতে যেতাম তখন একটি গর্ত করে তার মধ্যে দুই, তিনজন একসঙ্গে ঘুমাতাম। আমি বিস্ফোরণ বিষয়ে খুবই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছিলাম। সেই দিনগুলো আমি কোনোদিন ভুলতে পারবো না। এমন আরও অনেক স্মৃতি আছে যুদ্ধের। ১৮ অক্টোবর বালাপাড়া ইউনিয়েনের ডাঙ্গারহাটে যুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরনে সেখানে স্মৃতিচারণ ও ২৮ অক্টোবর টুনিহাট আক্রমন করেন পাক হানাদার বাহিনীরা। বর্তমানে আলহাজ্ব আশরাফ আলী একজন সফল বাবা। যুদ্ধ শেষে আবার নিজ গ্রামে ফিরে এসে পড়ালেখা শুরু করেন তিনি। হাজী আশরাফ আলী আরও জানান, বর্তমান সরকার আমাদের মুক্তিযোদ্ধার জন্য অনেক কাজ করছে। সরকার আমাদেরকে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ও রেশন না দিলে হয়তো আমরা যুদ্ধের পরে নিজেদেরকে এভাবে গড়ে তুলতে পারতাম না। আমাদের সংসার, সন্তানদের মানুষ করার জন্য সরকারের সহযোগিতা না পেলে আমরা পথে বসে যেতাম। তাই সরকারের প্রতি আমরা চির কৃতজ্ঞ।

এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ...